নবম-দশম শ্রেণীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (২৫ ডিসেম্বর, ২০১১)


প্রিয় শিক্ষার্থীরা, Srijonshil.com প্রকাশিত সৃজনশীল লেসনে তোমাদের স্বাগতম। আজ আমরা ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত সৃজনশীল প্রশ্নটির নমুনা উত্তর আলোচনা করবো এবং সেইসাথে তোমাদের অনুশীলনের জন্য রসায়ন বিজ্ঞান বিষয়ের একটি সৃজনশীল প্রশ্ন প্রকাশ করব।

আজকের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর (ভূগোল)

নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ করো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

এইবছর জলিল সাহেব খেয়াল করলেন রমজান মাসের প্রথম দিক থেকে শেষ দিকে রোজা রাখার সময়কাল (সেহেরী ও ইফতারের মধ্যবর্তী সময়) আস্তে আস্তে কমে এসেছে। উদাহরণস্বরূপঃ

 

সেহেরীর শেষ সময়

ইফতারের সময়

১ রমজান (২ আগস্ট)

৪:০৬

৬:৪২

২৯ রমজান (৩০ আগস্ট)

৪:২২

৬:২০

জলিল সাহেবের মনে আছে গত সাত-আট বছর আগেও যেখানে অনেকের মতো উনারও সেহেরী খেতে ওঠতে আলসেমী হতো এইবছর আর তেমনটি হয়নি। কিন্তু অন্যভাবে চিন্তা করে তিনি দেখেন বর্তমান বছরগুলোতে রোজা রাখার সময়কাল আগের বছরগুলো থেকে আস্তে আস্তে অনেক বেড়েছে।

ক. বছরের কোন দিনটিকে শারদ বিষুব বলা হয়?
খ. ২১ জুন দক্ষিণ গোলার্ধে কোন ঋতু পরিলক্ষিত হয় এবং কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত ক্ষেত্রে ১ রমজান থেকে ২৯ রমজানে রোজা রাখার সময়কাল কমার কারণ কী - ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জলিল সাহেবের সাত-আট বছর আগে রোজা রাখার অভিজ্ঞতার সাথে এই বছর রোজা রাখার অভিজ্ঞতার পার্থক্যের কারণ বিশ্লেষণ করো।

নমুনা উত্তরঃ

ক. ২৩ সেপ্টেম্বর দিনটিকে শারদ বিষুব বলা হয়।

খ. ২১ জুন দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল পরিলক্ষিত হয়।

কারণ ২১ জুন পৃথিবী নিজ কক্ষপথে ঘোরার সময় এর উত্তর মেরু সূর্যের দিকে হেলে থাকে।এতে উত্তর গোলার্ধের বেশি অংশে সূর্যের আলো পড়ে। দক্ষিণ গোলার্ধে এ সময় বিপরীত অবস্থা বিরাজ করে। সূর্য থেকে হেলে থাকার কারণে এ সময় দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্য কম সময় ধরে কিরণ দেয়। ফলে দিন ছোট এবং রাত বড় হয়। দিন ছোট হয় বলে দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যকিরণ কম সময় ধরে পড়ে। এতে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হওয়ার বেশি সময় পায় না। অন্যদিকে রাত বড় হওয়ার কারণে দিনে ভূপৃষ্ঠ যতটুকু উত্তপ্ত হয়, রাতে তার চেয়ে বেশি তাপের বিকিরণ হয়। এতে ভূপৃষ্ঠ ঠান্ডা হয়ে গিয়ে শীতের আবহাওয়া বিরাজ করে।তাই এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল পরিলক্ষিত হয়।

গ. আমরা জানি, বাংলাদেশ উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত এবং এইবছর (২০১১ সাল) রমজান মাস ছিল আগস্ট মাসে। আগস্ট মাসে পৃথিবী থাকে বার্ষিক গতিপথের A ও B চিহ্নিত অবস্থানের মাঝে। পৃথিবী A অবস্থানে থাকাকালে উত্তর গোলার্ধে দিন বড় ও রাত ছোট হয়। আবার, পৃথিবী B অবস্থানে থাকাকালে উত্তর গোলার্ধে দিনরাত সমান হয়। তাই বলা যায়, পৃথিবী যতই A অবস্থান থেকে B অবস্থানের দিকে যেতে থাকে, ততই উত্তর গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য কমে এবং রাতের দৈর্ঘ্য বাড়ে।

চিত্রঃ বার্ষিক গতির ফলে ঋতু পরিবর্তন

এই বছর ১ রমজানের সময় (২ আগস্ট) থেকে ২৯ রমজানের (৩০ আগস্ট) সময় পৃথিবী A অবস্থানের থেকে দূরে সরে গিয়ে B অবস্থানের কাছে চলে আসে। তাই ১ রমজান থেকে ২৯ রমজানের সময় দিনের দৈর্ঘ্য কমে এবং রাতের দৈর্ঘ্য বাড়ে। অর্থাৎ ১ রমজান থেকে ২৯ রমজানে দেরিতে সূর্য ওঠে কিন্তু আগে অস্ত যায়। ফলে চলতি বছরের ১ রমজান থেকে ২৯ রমজানে রোজা রাখার সময়কাল আস্তে আস্তে কমে যায়।

ঘ. আমরা জানি, প্রতি বছর রমজান মাস ১০ দিন করে এগোয়। তাহলে, গত সাত-আট বছরে রমজান মাস এগিয়েছে ৭০ - ৮০ দিন।
চলতি বছর রমজান মাস শুরু হয়েছিল ২ আগস্ট। তাহলে সাত-আট বছর আগে রমজান শুরু হয়েছিল চলতি বছরের থেকে ৭০ – ৮০ দিন আগে অর্থাৎ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে এবং ঐ সময় রমজান মাসের ব্যাপ্তি ছিল অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। আমরা জানি, এই সময় পৃথিবীর অবস্থান থাকে বার্ষিক গতিপথের B ও C চিহ্নিত অবস্থানের  মাঝে।  পৃথিবী B অবস্থানে থাকাকালে উত্তর গোলার্ধে দিন-রাত সমান থাকে এবং উত্তাপ মধ্যম রকমের থাকে। আবার, পৃথিবী C অবস্থানে থাকাকালে উত্তর গোলার্ধে রাত বড় ও দিন ছোট থাকে এবং শীতকাল থাকে। তাহলে, পৃথিবী যতই B অবস্থান থেকে C অবস্থানের দিকে যায় ততই উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট ও রাত বড় হতে থাকে এবং শীত পড়তে থাকে। যেহেতু অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে পৃথিবী B অবস্থান থেকে দূরে সরে গিয়ে C অবস্থানের কাছে চলে আসতে থাকে, তাই অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে উত্তর গোলার্ধে হালকা শীত পড়তে শুরু করে এবং নভেম্বরের দিকে এটি বাড়তে থাকে। তাই শীতের কারণে সাত-আট বছর আগে অনেকের মত জলিল সাহেবেরও ভোর রাতে ঘুম থেকে ওঠে সেহেরী খেতে আলসেমী লাগতো (যেহেতু, বাংলাদেশ উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত)। আবার, অক্টোবর-নভেম্বর মাসে দিন ছোট হয় ও রাত বড় হয়। অর্থাৎ, সূর্য দেরিতে ওঠে ও তাড়াতাড়ি অস্ত যায়। তাই সাত-আট বছর আগে রোজা রাখার সময়কাল এখনকার তুলনায় কিছুটা হলেও কম ছিল।
চিত্রঃ বার্ষিক গতির ফলে ঋতু পরিবর্তন
পক্ষান্তরে, চলতি বছর রমজান মাস ছিল আগস্টে এবং এই সময়ে পৃথিবী থাকে A ও B অবস্থানের মাঝামাঝি এবং এই সময় উত্তর গোলার্ধে থাকে গরম কাল। তাই এইবছর জলিল সাহেবের সেহেরী খেতে ওঠতে আগের মত আলসেমী লাগেনি। আবার আগস্ট মাসে দিন বড় থাকে, রাত ছোট থাকে। অর্থাৎ, সূর্য তাড়াতাড়ি ওঠে ও দেরিতে অস্ত যায়। তাই এই বছর রোজা রাখার সময়কাল সাত-আট বছর আগের তুলনায় বেড়েছে।

আজকের সৃজনশীল প্রশ্ন (রসায়ন বিজ্ঞান)

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

রহিম একদিন একটি বদ্ধ পাত্রে নিচের বিক্রিয়াটি করছিলঃ

চিত্রঃ রাসায়নিক সমীকরণ

এখানে বিক্রিয়ক ও উৎপাদ প্রত্যেকে গ্যাসীয়। রহিম খেয়াল করল বিক্রিয়াটি শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর একরকম বন্ধ হয়ে গেছে। সে জানত, তাপ দিলে বিক্রিয়ার বেগ বাড়ে।তাই সে বিক্রিয়াটির সম্মুখ বেগ বাড়ানোর জন্য তাপ দিতে লাগল।

ক. একক সময়ে একটি বিক্রিয়ার বিক্রিয়ক ব্যবহারের পরিমাণকে কী বলে?
খ. প্রভাবককে বিক্রিয়ক বলা যায় না কেন?
গ. বিক্রিয়াটির বর্তমান অবস্থায় চাপ বাড়ালে এর গতিপ্রকৃতির কী হবে, ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তাপ দেওয়ার ফলে রহিমের ইচ্ছে মতো বিক্রিয়াটির সম্মুখ বেগ বাড়বে কিনা, তা যাচাই করো।

প্রশ্নটির নমুনা উত্তর

প্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমরা জানো, জাতীয়ভাবে নেয়া পরীক্ষাগুলোতে সৃজনশীল প্রশ্ন কখনও কমন পড়বেনা। এই ক্ষেত্রে তোমাদের দরকার পর্যাপ্ত অনুশীলন। সুতরাং পরীক্ষায় ভাল করতে হলে, এরকম সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধান না দেখে নিজেই উত্তর দেয়ার চেষ্টা করো এবং পরে আমাদের দেয়া উত্তরের প্রেক্ষিতে নিজের উত্তরটি যাচাই করো।

মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করো।