নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
তিন্নিকে তার মা পাশের রুমে একটি চেয়ার নিয়ে যেতে বললো। এর পর পরই তিন্নি ৪ নিউটন বল প্রয়োগে ২৪ সেকেন্ড সময়ে চেয়ারটি নিয়ে গেলো। এতে সরণ হলো ৩ মিটার।তার মায়ের কাজ শেষে একই পরিমাণ বল প্রয়োগে সে চেয়ারটিকে আবার আগের জায়গায় নিয়ে আসলো।
ক. কাজ করার সামর্থ্যকে আমরা কী বলি?
খ. কোনো যন্ত্রের শক্তি বেশি হলে তার কি ক্ষমতা বেশি হবে? – ব্যাখ্যা করো।
গ. চেয়ারটি মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় তিন্নির ক্ষমতা কত ছিল?
ঘ. “দৈনন্দিন জীবনে কাজের যে অর্থ বুঝায় এবং কাজের বৈজ্ঞানিক অর্থ সবসময় এক নয়” - উক্তিটি উপরের উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
ক. কাজ করার সামর্থ্যকে আমরা শক্তি বলি।
খ. কোনো যন্ত্রের শক্তি বেশি হলে তার ক্ষমতা বেশিও হতে পারে, কমও হতে পারে।শক্তি বেশি হলে বেশি কাজ করা সম্ভব। কিন্তু ক্ষমতা বেশি হতে হলে শুধুমাত্র বেশি কাজ করলে হয় না। কম সময়ে বেশি কাজ করলেই শুধুমাত্র ক্ষমতা বেশি বলা যায়। তাই কোনো যন্ত্রের শক্তি থেকে এর ক্ষমতা বেশি হবে কিনা তা বলা সম্ভব নয়।
গ. আমরা জানি,
আবার আমরা জানি, কাজ = (বল x সরণ)
প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসারে চেয়ারটি পাশের রুমে নিয়ে যেতে,
তিন্নি কর্তৃক প্রযুক্ত বল = ৪ নিউটন
এবং চেয়ারের সরণ = ৩ মিটার
সুতরাং চেয়ারটি পাশের রুমে নিয়ে যেতে কৃত কাজের পরিমাণ = (৪ নিউটন x ৩ মিটার) = ১২ জুল
এই কাজটি করতে তিন্নির সময় লেগেছিল ২৪ সেকেন্ড।
তাই, মায়ের কাছে চেয়ারটি নিয়ে যাওয়ার সময় তিন্নির ক্ষমতা ছিল =
= ০.৫ ওয়াট
ঘ. দৈনন্দিন জীবনে কোনো কিছু করাকেই কাজ করা বুঝায়। আর বিজ্ঞানের ভাষায় কাজ বলতে কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং এর ফলে বস্তুর সরণের গুণফলকে বুঝায়। অর্থাৎ বস্তুর উপর শুধু বল প্রয়োগ করলে হবে না। বিজ্ঞানের ভাষায় কাজ পেতে হলে বল প্রয়োগে বস্তুটির সরণও হতে হবে।
প্রদত্ত উদ্দীপকে তিন্নি যখন চেয়ারটি পাশের রুমে নিয়ে যায় তখন এটিকে দৈনন্দিন জীবনে আমরা একটি কাজ বলতে পারি।আবার বিজ্ঞানের ভাষায় বললে, এক্ষেত্রে ১২ জুল কাজ হয়েছে। তাই চেয়ারটি পাশের রুমে নিয়ে যেতে বিজ্ঞানের ভাষায় ও দৈনন্দিন জীবনে উভয় ক্ষেত্রেই আমরা বলতে পারি কাজ হয়েছে।
আবার, তিন্নির চেয়ারটি নিয়ে যাওয়া ও নিয়ে আসা এই দুটি ঘটনা আমরা যখন একসাথে হিসেবে আনবো, তখন বলা যায়, তিন্নি কর্তৃক প্রযুক্ত বলে চেয়ারের কোনো লব্ধি সরণ হয়নি। চেয়ার আগে যে জায়গায় ছিল এখনও সে জায়গায় আছে। তাহলে, সরণের মান = 0 (শূন্য)
এইক্ষেত্রে কাজের পরিমাণ হবে,= ৪ নিউটন x 0 মিটার = 0 জুল
অর্থাৎ, তিন্নির চেয়ারটি পাশের রুমে নিয়ে যাওয়া ও পরে আগের জায়গায় নিয়ে আসা – এই পুরো বিষয়টিতে বিজ্ঞানের ভাষায় কোনো কাজ হয়নি। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে এইক্ষেত্রেও আমরা বলতে পারি, তিন্নি তার মায়ের জন্য কাজ করেছে। তাই এইক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ভাষায় কোনো কাজ না হলেও, দৈনন্দিন জীবনে এটিকে আমরা কাজ বলছি।
সুতরাং আমরা বলতে পারি – “দৈনন্দিন জীবনে কাজের যে অর্থ বুঝায় এবং কাজের বৈজ্ঞানিক অর্থ সবসময় এক নয়”।
মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করো।