জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (৬ মে)

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, Srijonshil.com প্রকাশিত সৃজনশীল লেসনে তোমাদের স্বাগতম। আজ আমরা গতদিন প্রকাশিত সৃজনশীল প্রশ্নটির নমুনা উত্তর আলোচনা করব এবং সেইসাথে তোমাদের অনুশীলনের জন্য আরও একটি সৃজনশীল প্রশ্ন প্রকাশ করব।

আজকের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (গার্হস্থ্য অর্থনীতি)

নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ করো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

গত কয়েকদিন ধরে তৃষাদের পরিবারে খাবারের তালিকা ছিল নিম্নরূপঃ


সকালবেলা

দুপুরবেলা

বিকালবেলা

রুটি, মুরগির মাংসের তরকারি

রুই মাছের তরকারি, গরুর মাংসের তরকারি, ভাত

রুই মাছের তরকারি, গরুর মাংসের তরকারি, ভাত

ক. সুষম খাদ্য ব্যবস্থায় দৈনিক মাথাপিছু কত গ্রাম তেল রাখতে হয়?
খ. আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আহারের তালিকায় প্রাতঃরাশের গুরুত্ব অত্যধিক কেন, ব্যাখ্যা করো।
গ. তৃষাদের পরিবারে খাদ্য তালিকা প্রণয়নে কী কী নিয়ম মানা হয়নি সেগুলো নিরূপণ করো।
ঘ. তৃষাদের পরিবারে এইরকম খাবার মেনু অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে তাদের যে যে সমস্যা হবে তার ধরন নির্দেশ করো।

নমুনা উত্তরঃ

ক. সুষম খাদ্য ব্যবস্থায় দৈনিক মাথাপিছু ৩০ গ্রাম তেল রাখতে হয়।

খ. রাতের খাবার খাওয়ার পর দীর্ঘ নিদ্রার সময় পাকস্থলির সমস্ত খাবার হজম হয়ে পাকস্থলি খালি হয়ে পড়ে। তাই সকালে প্রচন্ড ক্ষুধা লাগে। তাছাড়া প্রাতঃরাশের পর দুপুরের খাবারের মধ্যেও দীর্ঘ সময়ের ব্যবধান থাকে। কেউ কেউ মাঝে হালকা নাশতা খেয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে বেশিরভাগ লোকজন সকাল ও দুপুরের মধ্যবর্তী সময়ে তেমন কিছু খায়না। বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই মধ্যবর্তী সময়ে কিছু খাওয়ার সময় পায়না।কিন্তু এই সময়ে মানুষের কর্মব্যস্ততা থাকে বেশি। এজন্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আহারের তালিকায় প্রাতঃরাশ বা সকালের নাশতার গুরুত্ব অত্যধিক।

গ. বিভিন্ন প্রকার খাবারের সমম্বয়কে মেনু বলা হয় এবং এ সমম্বয় সাধনের সুনিপুণ পরিকল্পনাই হল মেনু পরিকল্পনা বা খাদ্য তালিকা প্রণয়ন। কিছু নিয়ম মেনে এই খাদ্য তালিকা প্রণয়ন করতে হয়। কিন্তু তৃষাদের পরিবারের খাদ্য তালিকা প্রণয়নে সবগুলো নিয়ম মানা হয়নি। অনিয়মগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ

তিনটি খাদ্য বিভাগের অসম বন্টনঃ আমরা জানি, খাদ্যের ৩টি বিভাগ থেকে খাবার নিয়ে সারাদিনের খাদ্য ব্যবস্থায় বণ্টন করে দিলে খাদ্যের ৬টি উপাদানই বর্তমান থাকে। এমনভাবে ভাগ করে দিতে হবে যেন কোনো বিশেষ সময়ে একটি উপাদানের আধিক্য না ঘটে। কিন্তু, তৃষাদের পরিবারে দুপুর ও রাত উভয় বেলার খাবার মেনুতে আছে ভাত, মাছ ও মাংস এবং সকালের নাশতায় আছে রুটি, মাংস। অর্থাৎ, এইক্ষেত্রে প্রোটিনের আধিক্য আছে।

খাবারে বৈচিত্র্যের অভাব ও মুখরোচক খাবারের অনুপস্থিতিঃ ভাত, রুটি, দুধ ব্যতীত অন্য কোনো খাবার যাতে দিনে দুবার গ্রহণ করতে না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে খাবারের মেনু তৈরি করতে হয়। কিন্ত, তৃষাদের পরিবারে দুপুর ও রাতের খাবার হলো রুই মাছের তরকারি, গরুর মাংসের তরকারি ও ভাত। দুই বেলায় একই রকম খাবার হওয়াতে খাবারে একঘেয়েমি সৃষ্টি হবে, কোনো বৈচিত্র্য থাকবে না। আবার তৃষাদের খাবার মেনুতে মুখরোচক কোনো খাবার না থাকাতে খাবারে আলাদা স্বাদ থাকবেনা। এতে পরিবারের সদস্যদের খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে যাবে।

খাদ্য তালিকায় মৌসুমী ফল ও শাকসবজির অভাবঃ একটি ভালো খাদ্য তালিকা তৈরিতে মৌসুম অনুযায়ী শাকসবজি, ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। কিন্তু তৃষাদের খাবারের মেনুতে এই ধরনের কোনো মৌসুমী ফল ও শাকসবজি নেই।
তাই বলা যায়, তৃষাদের খাবারের মেনু প্রণয়নে যেসব ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়নি সেগুলো হলোঃ তিনটি খাদ্য বিভাগের সুষম উপস্থিতি, খাবারে বৈচিত্র্যতা এবং খাদ্য তালিকায় মৌসুমী ফল ও শাকসবজির উপস্থিতি।


ঘ. দেহে তিন ধরনের খাদ্যের চাহিদা রয়েছে। এগুলো হলোঃ
দেহ গঠনকারী খাদ্য – মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল ইত্যাদি
তাপ উৎপাদনকারী খাদ্য – চাল, গম, আলু, চিনি, ঘি, তেল, চর্বি ইত্যাদি
দেহ নিয়ন্ত্রণ ও রোগপ্রতিরোধকারী খাদ্য – শাকসবজি ও ফলমূল
খাদ্যের এই তিনটি বিভাগ থেকে খাবার নিয়ে সারাদিনের খাদ্য ব্যবস্থায় বণ্টন করে দিলে খাদ্যের ৬টি উপাদানই বর্তমান থাকবে। অর্থাৎ খাবার সুষম হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।

তৃষাদের খাবারে আছে তাপ উৎপাদনকারী খাদ্য – ভাত, রুটি। এইছাড়া মাছ ও মাংসের তরকারি থেকে তেল ও চর্বি পাওয়া যাবে। তাই তাদের খাবারে তাপ উৎপাদনকারী খাদ্যের কোনো ঘাটতি হবেনা।

এইছাড়া, তৃষাদের সকাল বেলার খাবারের মেনুতে আছে মাংস এবং দুপুর ও রাতের বেলায় মাংসের সাথে মাছও আছে। তাই তাদের খাবারে দেহ গঠনকারী খাদ্যের ঘাটতি হবেনা।
কিন্তু তাদের খাবার মেনুতে কোনো ফলমূল কিংবা শাকসবজি নেই। এগুলো হলো দেহ নিয়ন্ত্রণ ও রোগপ্রতিরোধকারী খাদ্য। আমরা জানি, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বা বালক-বালিকার জন্য শাকসবজি কমপক্ষে ৩০০ গ্রাম প্রয়োজন এবং ফল ৫০-৬০ গ্রাম প্রয়োজন। শাকসবজি ও ফলমূলে থাকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। তাই তৃষাদের খাদ্যে ৬টি সুষম খাদ্য উপাদানের মধ্যে দুইটি উপাদানের সংকট হবে। এগুলো হলোঃ ভিটামিন ও খনিজলবণ।

তাই বর্তমান খাবার মেনুটি অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে তৃষাদের পরিবারে সকল সদস্যের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। স্কার্ভি রোগের মতো অনেক রোগ দেখা দিবে। দেহের কাজকর্ম সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে না। দেহের তরলতা বজায় থাকবে না। খাদ্য হজম ও শোষণে সমস্যা হবে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিবে।

 

আজকের সৃজনশীল প্রশ্ন (কৃষি শিক্ষা)

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো ও প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

স্বপন সাহেব একটি ৪৭ শতাংশের পুকুরে মাছ চাষ করেন। এইবার তার কিছু মাছের পাখনায় এবং কিছু মাছের লেজে সাদা সাদা দাগ পড়েছে। অন্যদিকে তার প্রতিবেশি বেলাল সাহেবের পুকুরের পানির রং বাদামী বর্ণের হয়ে গেছে। তার মাছগুলোর শরীরে ক্ষত দেখা দিয়েছে এবং মাছগুলো দ্রুত গতিতে ছোটাছুটি করে।

ক. মাছের উকুনজাত রোগ কোন পরজীবীর আক্রমণে দেখা দেয়?
খ. একটি মাছ রোগাক্রান্ত কিনা, তা কিভাবে বুঝা যায়?
গ. স্বপন সাহেব তার মাছের রোগগুলো কিভাবে প্রতিরোধ করবে, ব্যাখ্যা করো।
ঘ. স্বপন ও বেলাল সাহেবের মাছগুলো্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে কারণ কী, তা সাজিয়ে লিখো।

প্রশ্নটির নমুনা উত্তর

প্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমরা জানো, জাতীয়ভাবে নেয়া পরীক্ষাগুলোতে সৃজনশীল প্রশ্ন কখনও কমন পড়বেনা। এই ক্ষেত্রে তোমাদের দরকার পর্যাপ্ত অনুশীলন। সুতরাং পরীক্ষায় ভাল করতে হলে, এরকম সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধান না দেখে নিজেই উত্তর দেয়ার চেষ্টা করো এবং পরে আমাদের দেয়া উত্তরের প্রেক্ষিতে নিজের উত্তরটি যাচাই করো।

মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করো।