জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (৮ মে)

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, Srijonshil.com প্রকাশিত সৃজনশীল লেসনে তোমাদের স্বাগতম। আজ আমরা গতদিন প্রকাশিত সৃজনশীল প্রশ্নটির নমুনা উত্তর আলোচনা করব।

আজকের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (কৃষি শিক্ষা)

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো ও প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

স্বপন সাহেব একটি ৪৭ শতাংশের পুকুরে মাছ চাষ করেন। এইবার তার কিছু মাছের পাখনায় এবং কিছু মাছের লেজে সাদা সাদা দাগ পড়েছে। অন্যদিকে তার প্রতিবেশি বেলাল সাহেবের পুকুরের পানির রং বাদামী বর্ণের হয়ে গেছে। তার মাছগুলোর শরীরে ক্ষত দেখা দিয়েছে এবং মাছগুলো দ্রুত গতিতে ছোটাছুটি করে।

ক. মাছের উকুনজাত রোগ কোন পরজীবীর আক্রমণে দেখা দেয়?
খ. একটি মাছ রোগাক্রান্ত কিনা, তা কিভাবে বুঝা যায়?
গ. স্বপন সাহেব তার মাছের রোগগুলো কিভাবে প্রতিরোধ করবে, ব্যাখ্যা করো।
ঘ. স্বপন ও বেলাল সাহেবের মাছগুলো্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে কারণ কী, তা সাজিয়ে লিখো।

নমুনা উত্তরঃ

ক. আরগুলাস নামের এক ধরনের পরজীবীর আক্রমণে মাছের উকুনজাত রোগ হয়।

খ. একটি সুস্থ মাছের মাথা ও দেহের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে, দেহ উজ্জ্বল, পিচ্ছিল এবং পাখনা স্বাভাবিক থাকে। কোনো মাছে এর ব্যতিক্রম দেখা দিলে বুঝতে হবে মাছটি রোগাক্রান্ত হয়েছে। এইছাড়া মাছ রোগাক্রান্ত হলে আর যেসব উপসর্গ দেখা দেয় সেগুলো হলোঃ মাছ ছুটাছুটি করে; পানির উপরিভাগের কাছাকাছি সাঁতার কাটে বা ভেসে থাকে; পাখনা ভেঙে যায় বা পচন ধরে; ত্বক, পাখনা বা ফুলকায় ক্ষত বা ঘা হয়; চোখ বের হয়ে আসে; পেট ফুলে ওঠে বা শুকিয়ে যায়; দেহের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ইত্যাদি।

গ. স্বপন সাহেবের কিছু মাছের পাখনায় সাদা সাদা দাগ পড়েছে। এটি পাখনা পচা রোগের লক্ষণ। এইছাড়া তার আরও কিছু মাছের লেজে সাদা সাদা দাগ পড়েছে। এটি লেজ পচা রোগের লক্ষণ।

আমরা জানি, পাখনা পচা রোগ ও লেজ পচা রোগ প্রতিরোধ করতে হলে প্রতি শতক পুকুরে ১ কেজি চুন ও ১ কেজি লবণ পূর্বাহ্নে প্রয়োগ করতে হয়।

উদ্দীপক অনুসারে স্বপন সাহেবের পুকুরটি হলো ৪৭ শতকের।
তাই রোগগুলো প্রতিরোধ করার জন্য স্বপন সাহেবের পুকুরে
চুন প্রয়োগ করতে হবে = (১x ৪৭) কেজি  = ৪৭ কেজি
এবং লবণ প্রয়োগ করতে হবে =  (১x ৪৭) কেজি  = ৪৭ কেজি

 

ঘ. স্বপন সাহেবের মাছগুলোতে পাখনা পচা রোগ ও লেজ পচা রোগ হয়েছে। আমরা জানি, পুকুরে পচা কাদার পরিমাণ বেশি হলে এই রোগ হয়। তাই ধারনা করা যায়, স্বপন সাহেবের পুকুরে কাদার পরিমাণ বেড়ে গেছে।

অন্যদিকে বেলাল সাহবের পুকুরের মাছগুলোর শরীরে ক্ষত দেখা দিয়েছে এবং মাছগুলো দ্রুত গতিতে ছোটাছুটি করে। এইসব উপসর্গ মাছের উকুনজাত রোগের লক্ষণ। আমরা জানি, পুকুরে অতিরিক্ত কাদা থাকলে এবং খাদ্য বস্তু পচলে এই রোগ দেখা দেয়। পুকুরের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মাছের উকুনের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তাই ধারনা করা যায়, বেলাল সাহেবের পুকুরেও কাদার পরিমাণ বেড়ে গেছে। একইসাথে, বেলাল সাহেবের পুকুরের পানির রং বাদামী বর্ণের হয়ে গেছে। এই থেকে বুঝা যায় তার পুকুরে অতিরিক্ত শেওলার পুরু স্তর জমেছে। এই শেওলা পুকুরের পানির গুণাগুণ নষ্ট করে ফেলেছে, যা মাছের উকুনজাত রোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।

সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, স্বপন ও বেলাল সাহেবের মাছগুলোর রোগ ভিন্ন হলেও মূল কারণ হচ্ছে পুকুরের অতিরিক্ত কাদা জমা। এইছাড়া বেলাল সাহেবের মাছগুলোর আক্রান্ত হওয়ার পিছনে একটি অতিরিক্ত কারণ করেছে। সেটি হলো, পুকুরে অতিরিক্ত শেওলা জমা।

 

প্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমরা জানো, জাতীয়ভাবে নেয়া পরীক্ষাগুলোতে সৃজনশীল প্রশ্ন কখনও কমন পড়বেনা। এই ক্ষেত্রে তোমাদের দরকার পর্যাপ্ত অনুশীলন। সুতরাং পরীক্ষায় ভাল করতে হলে, এরকম সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধান না দেখে নিজেই উত্তর দেয়ার চেষ্টা করো এবং পরে আমাদের দেয়া উত্তরের প্রেক্ষিতে নিজের উত্তরটি যাচাই করো।

মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করো।