প্রিয় শিক্ষার্থীরা, Srijonshil.com প্রকাশিত সৃজনশীল লেসনে তোমাদের স্বাগতম। আজ আমরা গতদিন প্রকাশিত সৃজনশীল প্রশ্নটির নমুনা উত্তর আলোচনা করব এবং সেইসাথে তোমাদের অনুশীলনের জন্য আরও একটি সৃজনশীল প্রশ্ন প্রকাশ করব।
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
কবির তার ছোট ভাইকে নিয়ে এক শীতের সকালে তাদের স্কুল মাঠে দৌড় প্রতিযোগীতা খেলতে গেলো। সে যখন তার ভাইয়ের সাথে কথা বলছিল তখন খেয়াল করল তার কথার প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। স্কুল বিল্ডিং থেকে ৭৫ মিটার দূরে থাকা অবস্থায় কথা বলার ০.৪০ সেকেন্ড পর প্রতিধ্বনি তার কানে আসছিল। স্কুল বিল্ডিং-এর দিকে এগোতে থাকলে সে একসময় আর প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছিল না। একই রকম শব্দ সে যখন ঐদিন দুপুর বেলা (যখন বায়ু শুষ্ক ও তাপমাত্রা ৩০°সে.ছিল) করল, তখন সকাল বেলা যেখান থেকে প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছিল না,ঠিক সেখান থেকেই প্রতিধ্বনি শুনতে পারলো।
ক. শব্দ উৎপত্তির কারণ কী?
খ. মহাকাশে কোনো রকম বিস্ফোরণ ঘটলে তার শব্দ আমরা শুনতে পাই না কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত দিনে সকাল বেলায় শব্দের বেগ কত ছিল?
ঘ. প্রতিধ্বনি শোনার ব্যাপারে একই জায়গায় কবিরের দুই রকম অভিজ্ঞতা হলো কেন, বিশ্লেষণ করো।
নমুনা উত্তরঃ
ক. শব্দ উৎপত্তির কারণ হলো বস্তুর কম্পন।
খ. শব্দ শোনার জন্য শব্দ শুধু উৎপন্ন হলে হয়না। এটি সঞ্চালিত হতে হয়। আর এই সঞ্চালনের জন্য দরকার নিরবিচ্ছিন্ন জড় মাধ্যম। যদিও পৃথিবীতে নিরবিচ্ছিন্ন বায়ু মাধ্যম আছে। কিন্তু মহাশূন্যে বায়ু বা অন্য কোনো জড় মাধ্যম নেই।তাই মহাকাশে কোনো রকম বিস্ফোরণ ঘটলেও তার শব্দ পৃথিবীতে এসে পৌঁছায় না। তাই মহাকাশে কোনো রকম বিস্ফোরণ ঘটলে তার শব্দ আমরা শুনতে পাই না।
গ. সকাল বেলায় কবির যখন স্কুল বিল্ডিং থেকে ৭৫ মিটার দূরত্বে ছিল, তখন শব্দ উৎপন্ন হওয়ার ০.৪০ সেকেন্ড পর প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছিল।
এইক্ষেত্রে, শব্দ কবিরের কন্ঠ থেকে উৎপন্ন হয়ে স্কুল বিল্ডিং-এ প্রতিফলিত হয়ে আবার কবিরের কানে ফিরে আসতে মোট ১৫০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। এবং এই পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে ০.৪০ সেকেন্ড।
আমরা জানি,
= ৩৭৫ মিটার/সেকেন্ড
সুতরাং উদ্দীপকে উল্লেখিত দিনে সকাল বেলায় শব্দের বেগ ছিল = ৩৭৫ মিটার/সেকেন্ড
ঘ. আমরা জানি, প্রতিধ্বনি শোনার জন্য মূল শব্দ ও এর প্রতিধ্বনির মধ্যে নূন্যতম সময়ের ব্যবধান ০.১ সেকেন্ড হওয়া প্রয়োজন।
তাই প্রতিধ্বনি শোনার জন্য, কবিরের অবস্থান স্কুল বিল্ডিং থেকে এমন একটি নূন্যতম দূরত্বে হতে হবে যাতে কবিরের উৎপন্ন শব্দ স্কুল বিল্ডিং পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে আসতে অন্তত ০.১ সেকেন্ড হয়।
এবং এই সময়ের মধ্যে শব্দটি দুইবার এই নূন্যতম দূরত্ব অতিক্রম করে।
ধরি, এই নূন্যতম দূরত্ব = d মিটার
আমরা আগেই নির্ণয় করেছি, সকালবেলা শব্দের বেগ ছিল = ৩৭৫ মিটার/সেকেন্ড
সুতরাং আমরা পাই,
অথবা, ২ d = ৩৭৫ মিটার/সেকেন্ড x ০.১ সেকেন্ড
অথবা, ২ d = ৩৭.৫০ মিটার
অথবা, d = ১৮.৭৫ মিটার
সুতরাং সকালবেলায় শব্দের প্রতিধ্বনি শুনতে কবিরকে স্কুল বিল্ডিং থেকে অন্তত ১৮.৭৫ মিটার দূরত্বে থাকতে হয়েছিল। যেই মুহূর্ত থেকে তার দূরত্ব স্কুল বিল্ডিং হতে ১৮.৭৫ মিটারের কম হয়ে গিয়েছিল, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকে সে আর প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছিলনা।
কিন্তু দুপুর বেলা সে যখন একই রকম শব্দ করল তখন বায়ু ছিল শুষ্ক এবং তাপমাত্রা ছিল ৩০° সে.। আমরা জানি, এইক্ষেত্রে শব্দের বেগ হয় ৩৫০ মিটার/সেকেন্ড এবং শব্দের প্রতিধ্বনি শোনার জন্য শব্দের উৎস থেকে প্রতিফলকের নূন্যতম দূরত্ব হতে হয় ১৭.৫ মিটার।
এই কারণে, কবির সকালবেলায় ১৮.৭৫ মিটারের কম দূরত্বে প্রতিধ্বনি শুনতে না পারলেও, দুপুরবেলায় সেই জায়গা থেকেই প্রতিধ্বনি শুনতে পেল।
নিচের চিত্রটি লক্ষ করো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
ক. আপতন কোণ কাকে বলে?
খ. হালকা মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে প্রতিসরণের ক্ষেত্রে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন হয় না কেন?
গ. প্রদত্ত মাধ্যম দু’টির সংকট কোণের মান নিরূপণ করো।
ঘ. “B মাধ্যম থেকে A মাধ্যমে আসার সময় OX/ রশ্মিটি চিত্রে প্রদত্ত সম্ভাব্য তিনটি গতিপথের মধ্যে শুধুমাত্র X/R পথে প্রতিসরিত হবে” – উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
প্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমরা জানো, জাতীয়ভাবে নেয়া পরীক্ষাগুলোতে সৃজনশীল প্রশ্ন কখনও কমন পড়বেনা। এই ক্ষেত্রে তোমাদের দরকার পর্যাপ্ত অনুশীলন। সুতরাং পরীক্ষায় ভাল করতে হলে, এরকম সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধান না দেখে নিজেই উত্তর দেয়ার চেষ্টা করো এবং পরে আমাদের দেয়া উত্তরের প্রেক্ষিতে নিজের উত্তরটি যাচাই করো।
মতামত জানাতে এখানে ক্লিক করো।